Registered till today
Registration, Donation and Guest Fee Collected
Batch Registered
Donation collected
লক্ষ্মীপুর জেলা সদর উপজেলার প্রাচীনতম শাকচর ইউনিয়নের জব্বার মাস্টার হাট বাজারের পাশেই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাকচর জব্বার মাস্টার হাট উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৯১ ইং সালে মরহুম আবদুল মান্নান পোস্টমাস্টারসহ এলাকার সচেতন শিক্ষানুরাগী যুব সমাজের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর সদর ১৬নং শাকচর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাজারের নামের সাথে মিল রেখে বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়।
বৃহত্তর শাকচর ইউনিয়নের উত্তর টুমচর, জব্বার মাস্টার হাট, মজু চৌধুরীর হাট, করাতির হাট এবং চররুহিতা ইউনিয়নের পূর্বাংশ অত্যন্ত জনবহুল এলাকা। এই লোকালয়ে অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এবং তাতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তৎকালে জেলা শহর ব্যতীত আশেপাশে অন্য কোনো মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল না।
তখনকার সময়ে জেলা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ততটা উন্নত ছিল না। তাই অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তের সাথে সাথেই তাদের শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে বাধ্য হতো। এই সকল মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বহু প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে এলাকার জনগণের উদ্যোগে এবং ভূমি দানে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মূলত বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৩ ইং সালে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অর্থের বড় অংশের যোগান দেন আবদুল মান্নান মিয়া, আজাহার মিয়া এবং এলাকাবাসী। চৌধুরী গিয়াসউদ্দিন (অধ্যক্ষ) প্রশাসনিক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের মধ্যে মোঃ মাহবুবুল আলম, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, মাওলানা আলমগীর হোসেন, মুহাম্মদ সফিক উল্যাহ, মোঃ আলমগীর হোসেন, মুহাম্মদ অলি উল্যাহ, আহসান উল্যাহ তুহিন, মরহুম আখতার হোসেন এবং প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোঃ আনোয়ার হোসেন।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা এবং যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তাঁরা হলেন আবদুল মান্নান মিয়া ও রাব্বি এলাহী জহির। ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক দায়িত্ব পালন করেন মরহুম ডাঃ তোজাম্মেল হোসেন (তাজু ডাক্তার)।
মোট কথা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রম, ঘাম, অর্থ এবং আন্তরিক সহযোগিতায় আজ বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে।
আধুনিক প্রযুক্তি ও মানসম্মত শিক্ষাদানের মাধ্যমে সৎ, দক্ষ, নিষ্ঠাবান, আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তোলার লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানটির জন্ম। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য নিরলস শ্রম দিয়ে গেছেন প্রতিষ্ঠানের সকল উদ্যোক্তা, পৃষ্ঠপোষক, শিক্ষানুরাগী সামাজিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ এবং শুভাকাঙ্ক্ষী এলাকার সকল শ্রেণির জনগণ। এঁদের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করার মতো নয়।
১৯৯৫ ইং: জুনিয়র বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ।
১৯৯৯ ইং: নিম্ন মাধ্যমিক হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়।
২০০৪ ইং: মাধ্যমিক হিসেবে পাঠদানের অনুমতি পায়।
২০০৬ ইং: মাধ্যমিক হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
২০১৯ ইং: মাধ্যমিক হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়ের একটি চারতলা ভবন এবং একটি দুইতলা ভবন রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের কোনো সীমানা প্রাচীর নেই।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৫৬৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত। ইতিপূর্বে অত্র বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শেষে দেশের শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন। অনেকে উচ্চ শিক্ষা শেষে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
বর্তমানে জনাব মো: মাহবুবুল আলম প্রধান শিক্ষক, জনাব মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং ১৫ জন সহকারী শিক্ষক আছেন। প্রত্যেকেই শিক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞ ও কর্মঠ। এঁরা মমতার সাথে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভালো ছাত্র এবং দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন।
পাশাপাশি, বিদ্যালয়ে ৪ জন স্টাফ রয়েছেন, যাঁরা শিক্ষক মণ্ডলীর সাথে শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এঁদের প্রতি আজীবন ঋণ স্বীকার করতে হয়।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যেসব মহৎ ব্যক্তির উদ্যোগে ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে এবং বিদ্যালয়ের সম্মান ও সুনাম বাড়িয়ে যাচ্ছে, তাঁদের সবাইকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম ও অভিনন্দন। আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও অফুরন্ত সম্মান তাঁদের প্রতি।
হৃদয়ের গভীর থেকে প্রার্থনা করি: সৃষ্টিকর্তা তাঁদের সবসময় ভালো রাখুন এবং পরকালেও সম্মানের সাথে রাখুন।